হজ্বযাত্রীদের টিকা নিয়ে বিস্তারিত গাইডলাইন

hajj vaccine centre

হজ্বযাত্রীদের টিকা নিয়ে বিস্তারিত গাইডলাইন

অনেকে জানতে চাচ্ছেন—স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালে যেতে কি কোনো কাগজপত্র নিতে হয়?
নিম্মোক্ত মেডিক্যাল টেস্ট গুলা যে কোন সরকারী বেসরকারী হাসপাতাল এ করা যাবে। খরচ ৮০০ থেকে ২০০০ টাকা পড়তে পারে হাসপাতাল এর মান ভেদে।
hajj medical test
সাধারণত, আপনার পাসপোর্টের ফটোকপি অথবা হেলথ প্রোফাইল (যেটি https://pilgrim.hajj.gov.bd তে জেনারেট হয়) এর ফটোকপি বা মোবাইলে তোলা ছবি টেস্ট এন্ট্রি কাউন্টারে দেখালেই যথেষ্ট।
হেলথ প্রোফাইল জেনারেট হয়েছে কিনা, তা যাচাই করতে এই লিংকে গিয়ে (https://pilgrim.hajj.gov.bd) আপনার ট্র্যাকিং নম্বর/PID দিয়ে চেক করতে পারবেন। প্রথম ছবিটি হেলথ প্রোফাইলের। এইরকম হেলথ প্রোফাইল আপনার জেনারেট হবে। মোবাইল থেকে এবার ডাউনলোড করতে সমস্যা হচ্ছে, কম্পিউটার থেকে চেষ্টা করলে পারবেন ইনশাআল্লাহ্‌।

টেস্ট করার সময় কাগজপত্রগুলো চাওয়া হয় মূলত কয়েকটি কারণে—
  • প্রথমত, হাজীদের নামের সঠিক বানান ও অন্যান্য তথ্য যেন সঠিকভাবে এন্ট্রি হয়। অনেক সময় টিকাকেন্দ্রে নামের বানান ভুল থাকলে টিকা দেওয়ায় সমস্যা হয়, কারণ কে কার টিকা নিচ্ছেন—তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
  • দ্বিতীয়ত, যেহেতু এই টেস্টগুলো শুধুমাত্র হাজীদের জন্য বিশেষ ডিসকাউন্টে দেওয়া হয়, তাই সাধারণ রোগীরা যেন কম খরচে এই সুযোগ না নিতে পারেন সেটিও নিশ্চিত করা হয়। এই ডিসকাউন্টেড প্রাইসে হাসপাতালগুলোর খুব বেশি লাভ থাকে না। আমি নিজে একটি হাসপাতালে চাকরি করি, তাই বিষয়টি জানি।
টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে:
সরকারিভাবে টিকাকেন্দ্রের নাম ঘোষণা করা হলেও সব জায়গায় এখনও টিকা দেওয়া শুরু হয়নি, কারণ হাসপাতাল প্রশাসনের প্রস্তুতি সময়সাপেক্ষ। তাই আগে-ভাগে হাসপাতালে না গিয়ে আগে নিশ্চিত হয়ে নিন—আপনার এলাকায় টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে কিনা।
যখন টিকা দেওয়া শুরু হবে, তখন আপনার পূর্বে করা মেডিকেল পরীক্ষা/হেলথ প্রোফাইল প্রিন্ট করে ২–৩ কপি সঙ্গে নিয়ে নির্ধারিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাবেন। মনে রাখবেন, নিবন্ধনের সময় যে টিকাকেন্দ্র (জেলা) নির্বাচন করেছিলেন, সেই জেলাতেই আপনাকে টিকা নিতে হবে। এই তথ্যটি আপনার হেলথ প্রোফাইলের উপরের দিকে বড় করে লেখা থাকবে—

Vaccination District Selected in Registration:

যেমন: নিবন্ধনের সময় আপনি (সরকারী) বা আপনার এজেন্সি (বেসরকারী) আপনার NID অনুযায়ী নোয়াখালী টিকাকেন্দ্র দিয়ে দেয়, কিন্তু আপনি দিতে চাচ্ছেন ঢাকায়, পারবেন না—আপনাকে নোয়াখালীতেই নির্ধারিত কেন্দ্রে টিকা নিতে হবে।

 
অন্যদিকে, যদি ঢাকা দেওয়া থাকে, তাহলে ঢাকার যেকোনো নির্ধারিত টিকাকেন্দ্রে টিকা নিতে পারবেন।
টিকা নেওয়ার সময় করণীয়:
সাধারণত, নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা কাউন্টার রাখা হয়, কারণ টিকা বাহুতে দেওয়া হয় (যেমন কোভিড টিকা)।
১. প্রথমে একজন আপনার ওজন মেপে সিরিয়াল টোকেন দেবেন এবং আপনাকে মেডিকেল অফিসারের ডেস্কে পাঠাবেন।
২. মেডিকেল অফিসার আপনার রিপোর্টগুলো দেখে, কথা বলে এবং ক্ষেত্রবিশেষে প্রেসার মেপে হেলথ প্রোফাইলে স্বাক্ষর করবেন, যা প্রমাণ করে আপনি টিকা নেওয়ার জন্য ফিট।
৩. এরপর আপনি কাগজটি নিয়ে নার্স ডেস্কে যাবেন। সেখানে নার্স বা সহকারী বাহুতে টিকা দিয়ে সেই কাগজটি রেখে দেবেন।
❗ জরুরি বিষয়:
টিকা দেওয়ার পর সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে হেলথ প্রোফাইল ছবির মতো জেনারেট হয়ে যায়।
তবে, যদি আপনার ফ্লাইট এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে হয় এবং এখনো হেলথ প্রোফাইলে টিকার তথ্য দেখা না যায়, তাহলে আপনি যেই মেডিকেল সেন্টার থেকে টিকা নিয়েছেন, সেখানে দ্রুত যোগাযোগ করুন। তাদেরকে অনুরোধ করুন যাতে তারা সার্ভারে টিকার তথ্য দ্রুত আপলোড করেন। অনেক সময় ব্যস্ততার কারণে তথ্য আপলোডে দেরি হতে পারে।
নিশ্চিত থাকতে টিকা দেওয়ার সময় সেই কাগজটির একটি ছবি তুলে রাখতে পারেন বা টিকা নেওয়ার সময় একটি সেলফি তুলে রাখতে পারেন—যাতে প্রয়োজনে প্রশাসনিক অফিসে গিয়ে প্রমাণ করতে পারেন যে আপনি টিকা নিয়েছেন।
আল্লাহ্ আমাদের হজ্ব কবুল করুন, সুস্থ রাখুন। আরো কোন তথ্য জানার বা জানানোর দরকার মনে করলে কমেন্টে জানাতে পারেন।